বৃহৎ ও ক্ষুদ্র চিঠি

বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ও ক্ষুদ্র চিঠির


প্রাচীনকালে বার্তা বা তথ্য আদান প্রদানের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। তবে আধুনিক বিশ্বে ফেসবুক, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার ছাড়াও নানা মাধ্যম চিঠির স্থান দখল করেছে। এগুলো কাগজের সেই চিঠির বিকল্প হলেও আবেগ যেন ঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারেনি।

চিঠি বা পত্র হলো একজনের পক্ষ থেকে অন্যজনের জন্য লিখিত তথ্যধারক বার্তা। চিঠি দুজন বা দুপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখে। কাগজ আবিষ্কারের আগে মানুষ গাছের পাতায়, গাছের ছালে, চামড়ায়, ধাতব পাতে মনের ভাব প্রকাশ করত লেখনির মাধ্যমে। পাতায় লিখত বলেই এর নাম হয়েছে পত্র।

চিঠির ইতিহাস


ঐতিহাসিকভাবে চিঠির প্রচলন হয়েছিল প্রাচীন ভারত, মিশর, রোম, সুমের এবং চীনে। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা মাঝে মাঝেই পাথরে বা গুহার দেয়ালে খোদাই করা প্রাচীন চিঠি আবিষ্কার করেন। চিঠি সেসময় ছিল পাঠচর্চা, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা, বিতর্কমূলক লেখা বা সমমনা অন্যদের সঙ্গে আইডিয়া বিনিময়ের পদ্ধতি। কখনোবা চিঠি এতো শৈল্পিক রূপ পায় যে তা সাহিত্যের একটি বর্গ হয়ে ওঠে। কিছু লোক চিঠিকে মনে করতো কেবল লেখালেখি। আবার অন্যরা মনে করে যোগাযোগের মাধ্যম।
কালি ও কলম

স্বাক্ষরতা টিকিয়ে রাখতেও একসময় চিঠির অবদান ছিল। সুন্দর, শুদ্ধ চিঠির মাধ্যমে মানুষের শিক্ষা, বুদ্ধিমত্তা, রুচি ও ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। সুলিখিত চিঠি অনেক সময় উন্নত সাহিত্য হিসেবে বিবেচিত হয়। সাম্প্রতিককালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যক্তিগত চিঠি লেখার গুরুত্ব কিছুটা কমেছে। তবে সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যান্য জায়গায় এখনো চিঠি লেখার প্রচলন রয়েছে। তাও খুবই সামান্য। গত শতকে চিঠিই ছিল অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম।

অপেক্ষার চিঠি!

চিঠির অপেক্ষায় প্রেমিক বা প্রেমিকার পথের দিকে চেয়ে বসে থাকা। ছেলের চিঠির অপেক্ষায় বসে থাকতেন মা-ও। কিংবা স্বামীর চিঠির অপেক্ষায় মুখ ভার করে পুকুর পাড়ে স্ত্রীর বসে থাকা। এসবই আজ অতীত, যার কোনো অস্তিত্বই আর কখনো খুঁজে পাওয়া যাবে না। গ্রামবাংলা থেকে শহরের আনাচে কানাচে খাকি উর্দি পরা পোস্টম্যান সাইকেল চড়ে পিঠে ব্যাগ ভর্তি চিঠিপত্র ঝুলিয়ে নির্দিষ্ট বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে ডাক পাড়তো- চিঠি আছে গো! চিঠি!

অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকা গৃহকর্তা তখন পত্রদাতার লেখনীর সুন্দর প্রতিফলন ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ এই চিঠির মাধ্যমে জানত পারতো। ব্যক্তিগত চিঠিগুলো হতো আন্তরিকতাপূর্ণ এবং হৃদয়স্পর্শী। পত্রলেখকের আবেগের অনুরণন, আনন্দের হাতছানি ও দুঃখের বিষাদগাথা কিংবা অভিমান। সব কিছুরই যেন অনুভব  করতে পারতেন প্রাপক। সেসময় চিঠির কাগজ একটা বিশাল ব্যাপার ছিল।

শুধু কাগজ দেখেই বোঝা যেত যিনি চিঠি লিখেছেন তার যত্ন আর ভালোবাসা কতটা গভীর। যা আজ আধুনিক যুগের মেশিন নির্ভর মানুষ বুঝতেই পারবে না। চিঠির আরেকটা দারুণ বিষয় ছিল এর গন্ধ। যিনি চিঠি লিখতেন তার স্পর্শ পেতে প্রাপক মানে যাকে চিঠি লেখা হচ্ছে কাগজ শুকেও দেখতেন। কেউবা চিঠিতে আলাদা করে সুগন্ধি যোগ করে দিতেন। আবার প্রিয়জনের সেই চিঠি যত্ন করে বইয়ের ভাজে রেখে দিতেন অনেকে।

তবে হাতে লেখা চিঠির আনন্দ কিছুতেই এই আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা সম্ভব না। যারা অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষ তাদের অনেকের চিঠি নিয়ে বইও আছে। যেমন পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু তার কন্যা ইন্দিরাকে যে চিঠি লিখতেন তা সংকলিত করে একটা বই করা হয়েছে বইটির নাম বাবার চিঠি। বাইবেলের বেশ কয়েকটি পরিচ্ছেদও চিঠিতে লেখা। চিঠিগুলোর ভাষা ও ভাবকে মনেই হতো শত ফুল দিয়ে গাঁথা একটি গল্প বা উপন্যাস।
চিঠি লিখছেন এক নারী

বিশ্বের বৃহৎ ও ক্ষুদ্র চিঠি



বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিঠিটি লিখেছিল নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের একজন নারী তার প্রেমিককে। ১৯৫২ সালে কোরিয়াতে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার প্রেমিক মার্কিন সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসেবে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। তখন তিনি তিন হাজার ২০ ফুট লম্বা একটি চিঠি লিখে ফেলেন তাকে। যা লিখতে তার সময় লেগেছিল একমাস।

আবার খুবই ক্ষুদ্র চিঠিটিও লেখা হয়েছিল চমৎকার ভাষাতে। এটি লিখেছিলেন ফ্রান্সের বিখ্যাত সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক ভিক্টর হুগো।শুধু ইতিহাসের দিকে তাকালে চিঠির গুরুত্বকে বোঝা অসম্ভব। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে চিঠি ছিল উল্লেখযোগ্য সম্পদ। বাংলা সাহিত্যে চিঠিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে একের পর এক পত্রসাহিত্য।

কবি-সাহিত্যিকদের চিঠি নিয়ে ভাবনা


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প ‘স্ত্রীর পত্র’ পুরোটাই চিঠির আকারে গল্প। আবার তার লেখা অন্য একটি ছোট গল্প ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পে আমরা দেখতে পাই অজ পাড়া গাঁয়ের পোস্ট অফিসের সঙ্গে জড়িয়ে নানা ঘটনাচিত্র। রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্রও কিন্তু পত্রের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। চিঠি যে শুধু মনের ভাব আদানপ্রদান হতো তা নয়। বরং কবি সাহিত্যিকদের চিঠির মধ্যেই ফুটে উঠতো সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা দিক।

কবি কালিদাস কর্তৃক প্রেমিকার নিকট প্রেরিত বার্তাতে দূত ছিল মেঘ। নল-দময়ন্তীর পত্রের বাহক হাঁস, আবার রামায়ণের পত্রবাহক হনুমান, মহাভারতে বাহক- বিদুর ও আনারকলিতে চিঠি দূতিয়ালির কাজে ব্যবহৃত হতো হরিণ। এছাড়াও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শৈশবের লেখা একটি চিঠি বা পত্র সম্পর্কে বলতেই হয়, তিনি বাড়ি থেকে বহুদূরে পড়তে গিয়েই সবেমাত্র বাংলা স্বরবর্ণের পরিচয় হয়েছিল। তখন তার টাকার প্রয়োজন হয়েছিল।
ডাকবক্সে চিঠি দিচ্ছে এক শিশু

তিনি কী আর করবেন, শুধু মাত্র স্বরবর্ণ দিয়েই বাবার কাছে চিঠি বা পত্র লিখে ফেললেন। বর্ণের সঙ্গে ‘কার’ যোগ করলে তা ঠিক এমনটি হয় ‘বাবা টাকা পাঠাও তো পাঠাও, না পাঠাও তো- ভাত অভাবে মরি’। তার চিঠিতে যেটি লেখা ছিল এই ভাবে- ‘বব টক পঠও ত পঠও ন পঠও ত ভত অভব মর’। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ চিঠির সংকলনে বই আছে মুক্তিযুদ্ধের চিঠি।

চিঠির প্রচলন শুরুর ইতিহাস


পৃথিবীতে কে কখন কাকে প্রথম চিঠি লিখেছে সে বিষয়ে তথ্য আজো অজানা। তবে বহু বছর আগে মেসোপটেমিয়ার সুমেরিয়ান অঞ্চলে মানুষ ছবি এঁকে মনের ভাব প্রকাশ করত। যেমন- আকাশের তারা দিয়ে বোঝানো হত রাত, কিংবা তীর ও ধনুকের ছবি দিয়ে বোঝানো হত যুদ্ধের বর্ণনাকে। ছবির মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশের এই মাধ্যমের নাম ছিল পিক্টোগ্রাম। এই পিক্টোগ্রামকে বলা হয় চিঠির বিবর্তিত রূপ।

উপমহাদেশীয় প্রাচীন ইতিহাস অনুসারে জানা যায়, আগেকার রাজা বাদশারা প্রেমিকার কাছে চিঠি লিখতেন। তারা এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য যে কোনো রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থাপন করতে এবং দেশের কূটনৈতিকদের মধ্যে খবর আদান প্রদান হতো চিঠির মাধ্যমে। স্ব-দেশের খবর দূর-দূরান্তে পৌঁছাতে ঘোড় সওয়ার হয়ে বা কবুতর কিংবা পাখির পায়ে চিঠি লিখে উড়িয়ে দেয়া হতো।

এজন্য পায়রাকে রীতিমতো দেয়া হত প্রশিক্ষণ। প্রতুত্তরে অন্যান্য দেশের রাজারাও কবুতরের পায়ে চিঠি লিখে খবর পাঠিয়ে দিতেন। সম্রাট চেঙ্গিস খাঁ তার অধিকৃত রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতেন এই কবুতরের মাধ্যমে। যিশুর জন্মের ২৪০০ বছর আগে ফারাও রাজারা দূত মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করতেন বলে জানা যায়। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, পারস্য সাম্রাজ্যে ডাকব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়েছিল। বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হলেও খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০-এর ফারসি রাজা কোরসের সময়কার নথি বা দলিল একেবারেই ফেলনা নয়।

তারা বাধ্যতামূলক রাজ্যের প্রতিটি নাগরিকের অভ্যর্থনাপত্র ও চিঠি বিতরণ করতেন। চীনের জিয়াং বা সাং বংশের দাবি, প্রাচীন চিঠি বা ডাকব্যবস্থা তাদের হাত ধরেই এসেছিল। ইতিহাস বলে, ২২০ খিস্টপূর্বাব্দে হ্যান রাজবংশীয় লি পুনরায় ডাকব্যবস্থা চালু করেন। তাং রাজবংশীয় ইতিহাসে ১৬৩৯টি পোস্ট অফিস এবং ২০ হাজারেরও বেশি ডাকপিয়নের নজির মেলে। আবার রোমেও ডাক বিভাগের ইতিহাস পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৬২ সালে রাজা অগাস্টাস কেসারের সময় ডাক সার্ভিসকে ‘কারসাস পাবলিকাস’ নামে ডাকা হতো।

এছাড়াও জানা যায়, সম্রাট শের শাহের সময়েই ঘোড়ায় চড়ে ডাক বিলির প্রথা চালু হয়। তিনি ডাক ব্যবস্থার সুবিধার্থে নির্মাণ করেছিলেন সোনারগাঁও থেকে সিন্ধু প্রদেশ পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তা। তার শাসনকালে ভারতীয় ডাক ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ঘটে। কালক্রমে জমিদারদের এমন প্রথা চালু ছিল। তারপর যত দিন এগিয়েছে ডাক ব্যবস্থায় এসেছে নতুন সংযোজন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় চিঠি আদান প্রদানের প্রচলন দেখা দিয়েছিল।
রানারের পিঠে চিঠি

রানাররা পিঠে চিঠি বা সংবাদের বস্তাসহ এক হাতে হারিকেন অন্য হাতে বর্শা নিয়ে রাতের অন্ধকারে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে যেতেন। দিল্লির প্রথম সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেকের শাসনকালে ডাক ব্যবস্থায় যুক্ত হয় ঘোড়ার ব্যবহার। পর্যটক ইবন বতুতার বিবরণী থেকে জানা যায়, সেই সময়ে দুইভাবে ডাক ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। এক পায়ে হেঁটে সাধারণ ডাক বিলিবণ্টন। আর অন্যটি হল জরুরি অবস্থায়। যেমন কোনো বহিরাগতদের আক্রমণের সংবাদ অথবা যুদ্ধের জয়-পরাজয়ের সংবাদ প্রেরণ করা হত ঘোড়ার ডাক ব্যবস্থার মাধ্যমে।

ডাক ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল প্রান্তিক মানুষের জীবন-জীবিকা। এক্ষেত্রে তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের ‘ডাকহরকরা’ ছোটগল্পে আমরা খুঁজে পাই এক নিষ্ঠাবান ও দায়িত্ববান ডাকহরকরা ও তার দুশ্চরিত্র ছেলের গল্প। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতায় উঠে এসেছে এক কল্পিত রানারের রাত-দিনের সংগ্রামের চিত্র। রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম্ ঘণ্টা বাজছে রাতে, রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে, রানার চলেছে, রানার!

প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে গ্রামবাংলার বুক থেকে চিরবিদায় নিয়েছে ডাকহরকরা জীবিকা। এখন ডাকঘরগুলোতে যা চিঠি আসে তার সিংহভাগটাই দাফতরিক। সেগুলো হয়ত স্কুল কলেজ বা অফিসের কোনো দরকারি চিঠি। তাই গ্রাম থেকে শহরের এখনো যতগুলো ডাকঘর আছে সেখানে চিঠি পত্রের আদান-প্রদান কাজটা ক্রমশ গৌণ হয়ে আসছে।১৯ শতকের আগে খাম খুবই দুর্মূল্য বস্তু ছিল। কারণ তখন পর্যন্ত খাম সব হাতে বানানো হতো। সে সময় মানুষ আর খাম কিনতে যেত না।

চিঠি লিখে ভাঁজ করে সিল করে দিতো যেন অন্য কেউ খুলে পড়তে না পারে। সেসব দিনের সেই চিঠির ভাষা হতো ঠিক এমন- এলাহী ভরসা। সম্বোধন করতো এমনভাবে, পাকজনাবেষু ভাইজান, আমার শত কোটি সালাম গ্রহণ করিবেন। সকলকেই আমার সালাম এবং ভালবাসা পৌঁছাইয়া দিবেন। পর সমাচার এই যে বা শ্রীচরণেষু, পূজনীয়, শ্রদ্ধেয়, ইতি ইত্যাদি। এসব শব্দগুলোর ব্যবহার বলতে গেলে চিরতরে হারিয়েই যাচ্ছে। চিঠি থাকবে শুধু ইতিহাসের পাতায়।



from Tuneshut https://ift.tt/3eS9adK
bangla,bangla tech,bangla tech s,bangla news,bangla tutorial,tech bangla it,tech bangla,bangla tech channel exposed,tech bangla pro,bangla tech channel roasted video,bangla tv channel,bangla channels,in bangla,bangla movie,bangla news 24,bangla review,bangla boy,news bangla,new tech,tech,tyag bangla movie,shaj tech,news bangla 24,debtech bangla channel,like app bangla,bangla android,bangla tutorial idm, bangla,bangla funny video,bangla movie,bangla new movie,funny facebook posts,new bangla funny video,funniest facebook posts,post office,bangla natok,bangla movie song,bangla facebook post,bangla tutorial,new bangla natok,bangla full movie,bangla cinema,bangla dhadha,bangla natok post mortem,bangla funny facebook post,bangla motivational video,bangla facebook funny,facebook post,facebook funny post, Credit Tuneshut -